বর্তমান ভারতে বেশিরভাগ মহিলা এখনো আর্থিকভাবে তেমন স্বাধীন বা স্বচ্ছল নয়। আর্থিক বিষয়ে পরিবারের থেকে সহায়তা নেওয়ার রীতি এখনো রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে যেমন কেউ স্বামীর উপর ভরসা করেন, কেউ ছেলের উপর, কেউ আবার মেয়ের উপর ভরসা করেন। আবার অবিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রে বাপেরবাড়ির উপর ভরসা করতে হয়। আর এইসব কারণে ভারত সরকার মহিলাদের সুবিধার্থে নানা প্রকল্প ও স্কিম চালু করে থাকে। এইসব স্কিমে মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার প্রচেষ্টা করে সরকার।
বর্তমানে দেশে মহিলাদের উন্নয়নের স্বার্থে একাধিক স্কিম ও যোজনা চালু রয়েছে। এইসব স্কিম ও যোজনায় নানাভাবে মহিলাদের সহায়তা প্রদান করা হয়। বছরখানেক আগে, কেন্দ্র সরকার মহিলা উন্নয়নের জন্য চালু করেছে সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা। এই যোজনা কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। কন্যা সন্তান বাড়িতে জন্ম নেওয়ার পরেই এই যোজনায় বিনিয়োগ করা যায়। আর এই যোজনা ভবিষ্যতে এক সুদূরপ্রসারী রিটার্ন দিয়ে থাকে। অর্থাৎ মেয়ের বিয়ের বয়সে আর বিয়ের খরচ নিয়ে ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন নেই অভিভাবকদের। এখন একনজরে দেখে নিন এই স্কিমের কিছু সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে।
■ স্কিমের সুবিধা সম্পর্কে জানুন
এই সরকারি স্কিমে সেভিংস অ্যাকাউন্টের তুলনায় বেশি সুদ পাওয়া যায়। গত বছর এই স্কিমের সুদের হার বাড়িয়ে ৮.২০ শতাংশ করা হয়। তবে এই সুবিধা লাভ করতে গেলে একটি শর্ত মেনে চলতে হবে। আর সেটি না করলেই বন্ধ হওয়ার যাবে এই সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার অ্যাকাউন্ট।
■ স্কিমের শর্তগুলি দেখে নিন
এই অ্যাকাউন্টে সবসময় সর্বনিম্ন ব্যালেন্স রাখতেই হবে। যদি তিন মাস এই সর্বনিম্ন ব্যালেন্স না রাখা হয়, তাহলে কিন্তু এই স্কিমের সুবিধা পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে উপভোক্তাদের জন্য। আর এই সর্বনিম্ন ব্যালেন্স হিসেবে অ্যাকাউন্টে ২৫০ টোকা ফেলে রাখতেই হবে।
■ কারা সুবিধা পাবেন?
এই স্কিমের সুবিধা দেশের সব কন্যা সন্তানদের দেওয়া হবে। একটি পরিবারের সর্বোচ্চ দু’জন মেয়ের জন্য এই সুবিধা দেওয়া হয়। তবে যদি যমজ কন্যা সন্তান হয়, সেক্ষেত্রে যমজ ছাড়াও আরো একজন, অর্থাৎ একই পরিবারের তিনজন এই স্কিমের সুবিধা লাভ করবেন।
■ কিভাবে সুবিধা পাবেন?
এই যোজনার সুবিধা পাওয়ার জন্য প্রথমেই আপনার নিকটবর্তী যেকোনো ব্যাঙ্কের শাখায় গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে আপনার মেয়ের নামে। আর এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই বিনিয়োগ শুরু হবে। তবে এই যোজনার বেশ কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল শিশুকন্যার বয়স ১০ বছর হওয়ার আগেই এই অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। বয়স ১০ পেরিয়ে গেলে কিন্তু এর এই সুযোগ থাকবেনা। মোট ১৫ বছর এই স্কিমে বিনিয়োগ করে ৮ শতাংশ সুদ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ২১ বছরে এই স্কিম ম্যাচিওর হয়ে থাকে।